২৭ মিনিটে ৫০ হাজার গাড়ির অর্ডার পেলো শাওমি

শাওমি তাদের গাড়ির ঘোষণা দেবার মাত্র ২৭ মিনিটের মাঝে ৫০ হাজার গাড়ির অর্ডার অর্ডার পরে।

এ্যাপল কোম্পানি টানা দশ বছর ধরে গবেষণা করার পর সম্প্রতি তারা তাদের বিলাসী ’প্রজেক্ট টাইটান’ (’এ্যাপল কার’) বাতিল ঘোষণা করেছে।

এই দশ বছরে গবেষণা বাবদ তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন ইউএস ডলার।

কম্পিউটার থেকে মোবাইলের বাজারে পর্দাপন করেই যেমন বিশ্বজুড়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলো, তেমনি এ্যাপল ভেবেছিলো আবার তারা মোবাইল থেকে গাড়ীর বাজারে প্রবেশ করে বৈশ্বিক গাড়ীর বাজার ওলট পালট করে দিবে।

কিন্তু গুড়ি বালি! তা ঠিক কি কি কারণে এ্যাপলের বিলিয়ন ডলার বাজেটের গুড়ে বালি পড়ে গেলো?

খুব শীঘ্রই আমি ও আমার টিম মিলে একটা কনটেন্ট রেডি করছি!

এ্যাপল আমার খুব প্রিয় ব্র্যান্ড, তাই এই ব্র্যান্ডের কোন সাকসেস বা ফেইলিওর স্টোরি আমি খুবই আগ্রহ সহকারে পড়ি।

বিশ্বের আরো অনেক এ্যাপল ফ্যানের মতো এ্যাপল কার নিয়ে আমিও খুবই আশাবাদি ছিলাম, তাই এই খবর শুনে খুবই হতাশ হলাম।

কিন্তু ট্রাজেডি তো এখনো বাকী।

এ্যাপল কারের প্রজেক্ট যে সময়ে অফিসিয়ালি বাতিল ঘোষণা করে বিশ্বের মিডিয়ায় খবর চাউর হওয়া শুরু করলো, প্রায় ঠিক একই সময়ে আরেকটা কোম্পানি তাদের অসাধারন ডিজাইন ও ফিচারের ইলেকট্রিক কার বাজারে আনার ঘোষণা দিলো।

গেস করেন তো কোম্পানিটার নাম কি?

শাওমি

জ্বি, অনেকেই শাওমিকে স্রেফ একটা চাইনিজ মোবাইল কোম্পানি বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন!

সেই শাওমি এমন এক জিনিস করে দেখেয়েছে, সেটা স্বয়ং এ্যাপল করতে ব্যর্থ হয়েছে!

গবেষণার সময় এবং টাকার পরিমান দুটো বিনিয়োগই প্রায় সমান ছিলো

অর্থাৎ, শাওমি টানা ১০ বছর গবেষণা করে ও ১০ বিলিয়ন ইউয়ান (১.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার) খরচ করে এই বছর তিনটা মডেলের ইলেকট্রিক গাড়ী আনছে বাজারে।

আর শাওমির টিমে কতজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলো, সে সংখ্যাটা জানলে আপনি নির্ঘাত ভিমরি খাবেন!

৩.৪০০ জন।

শাওমি এভাবেই এ্যাপলকে টেক্কা দিয়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো?

কেন “আরো এক ধাপ” বল্লাম, জানেন?

কারণ, শাওমি গত বছরই আইফোনকে টেক্কা দিয়ে বিশ্বের সবচাইতে বড় মোবাইল ফোন উৎপাদকারী ব্র্যান্ডের তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করে ফেলেছে।

প্রথমে আছে স্যামসাং। আর ২য়তে শাওমি। অথচ ২০২২ সালেও ২য়তে ছিলো আইফোন।

তো আইফোনের জায়গা নেবার পর এবার নিজস্ব গাড়ীর ব্র্যান্ডেও এ্যাপলকে হারিয়ে দিলো শাওমি।

এই কারণেই ’আরেক ধাপ’ বলেছি।

আরো মজার ব্যাপার কি জানেন?

এই তথ্যটা হয়তো অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য ঠেকবে।

কিন্তু যারা প্রযুক্তি দুনিয়ার খোজঁ খবর রাখেন, তারা পড়ামাত্র বুঝবেন যে আমি এক বর্ণও বানিয়ে লিখছি না। যা লিখছি তার শতভাগ সত্যি

শাওমি তাদের গাড়ীর ঘোষণা দেবার মাত্র ২৭ মিনিটের মাথায় ৫০ হাজার ইউনিটের অর্ডার পড়ে।

ক্যান ইউ বিলিভ ইট?

শাওমির সিইও অলরেডি গনমাধ্যমকে বলেছে – “আমাদের গাড়ীর এত বিপুল পরিমান চাহিদা, তা আমার বুঝতে পারিনি। আমার ভয় হচ্ছে যে, আমরা সময়মতো গাড়ী সাপ্লাই দিতে হিমশিম খাবো! আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের প্রডাকশন ক্যাপাসিটি কয়েকগুন বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি”!

এই ঘটনাটা বিশ্বের যে কোন ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির জন্য রীতিমতো স্বপ্নের মতো ঘটনা!

শুনেছি শাওমির ডিজাইন টিম আগে এ্যাপলের আইফোন ডিভিশনে জব করতো, কোনো একটা কারণে বনি বনা না হওয়াতে পুরো টিমশুদ্ধ চাকরী ছেড়ে চায়নাতে গিয়ে শাওমি নিজেরাই একটা কোম্পানি চালু করে। MI = Mobile Internet

প্রযুক্তি দুনিয়া অসম্ভব রকম ভোলাটাইল!! খুবই টালমাতাল!! এইখানে আজ একজন রাজা তো কালই আরেকজন প্রজা!! নাহলে কেউ কোনদিন ভুলেও কল্পনা করেছে যে এ্যাপলের মতো কয়েক দশকের পুরনো কোম্পানি যে প্রুযুক্তি অনেক চেস্টা তদ্বির করেও আনতে পারবে না, সেটাই শাওমির মতো স্বল্প বয়স্ক একটা কোম্পানি অনায়াসে এনে ফেলবে।

Leave a Comment